অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সোহেল রানা ওরফে হিমেল (২৭) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের রেল জগন্নাথপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি হাতকড়া উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার সোহেল রানা কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে কয়েক বছর ধরে রেল জগন্নাথপুরে বসবাস করছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এসআই পরিচয়ে প্রতারণা করাই সোহেল রানার পেশা। এ ঘটনার আগে তাঁর বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দুটি এবং মেহেরপুর সদর, কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারা থানায় একটি করে মামলা আছে।
আলমডাঙ্গা থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোহেল রানা গত ৩১ অক্টোবর আলমডাঙ্গা শহরের স্টেশনপাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য দ্বীন মোহাম্মদের বাড়িভাড়া নেওয়ার জন্য যান। দ্বীন মোহাম্মদের কাছে তিনি নিজেকে কুষ্টিয়া থেকে আলমডাঙ্গা থানায় বদলি হয়ে আসা এসআই সোহেল রানা হিসেবে পরিচয় দেন। বাড়িভাড়া দেওয়ার আগে তথ্য যাচাইয়ের জন্য দ্বীন মোহাম্মদ আলমডাঙ্গা থানায় যোগাযোগ করেন। তিনি জানতে পারেন, সোহেল রানা নামে এ থানায় কোনো এসআই নেই বা কুষ্টিয়া থেকে কেউ বদলি হয়েও আসেননি। দ্বীন মোহাম্মদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানা-পুলিশ অভিযানে নামে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে সোহেল রানাকে আটক করা হয়। পরে বাড়ির মালিক দ্বীন মোহাম্মদের মুখোমুখি করা হলে তিনি প্রতারক সোহেল রানাকে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ হাদীউজ্জামান বাদী হয়ে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে গতকাল রাতেই মামলা করেছেন। আজ শনিবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তারের পর সোহেল রানা জানিয়েছেন, পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা করা তাঁর আয়ের একমাত্র উৎস। এর আগে এসআই পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও আশপাশের জেলা পুলিশের হাতে কয়েক দফা গ্রেপ্তার হয়েছে। সদ্য কারামুক্ত হওয়ার পর আবারও পুরোনো পেশায় নেমেছে।
পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগে গত ১৪ মার্চ চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সোহেল রানাকে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাকেরদাহ উত্তরপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে পুলিশের পোশাক ও জ্যাকেট, এসআই ব্যাজ, পিস্তলের কভার ও মেহেরপুর থেকে ছিনতাই করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। ২০২১ সালের এপ্রিলে আলমডাঙ্গা উপজেলার আসমানখালী এলাকার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির সাজা মওকুফ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল সোহেল।
২০২২ সালের ২৯ মার্চ বিয়ের জন্য চুয়াডাঙ্গা শহরের শেখপাড়ায় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে পাত্রী দেখতে আসেন সোহেল। সে সময় নিজেকে যশোরের মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন হিসেবে পরিচয় দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে মনিরামপুর থানায় যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ওই থানায় সুমন নামে কোনো এসআই নেই। বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
Leave a Reply